সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি লেগেই থাকে! এই টুকিটাকি খুনসুটি কোন কোন সময় আনন্দ উল্লাসের গণ্ডি পেরিয়ে রুপ নেয় ঝগড়া বিবাদের মতো বড় ঘটনায়। শান্তিপূর্ণ টুকিটাকি খুনসুটির মধ্যে একে অপরকে অসম্মানজনক বা কটাক্ষ করে কথাবার্তা বলা থেকেই শুরু হয় বিরোধ-বিরহের এমনকি বিচ্ছেদের।

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি

আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি বিষয়গুলো। এছাড়াও আরো জানতে পারবেন কি ধরনের কাজগুলো করলে সংসারে শান্তি বিনষ্ট হয়, উন্নতি কমে যায় ও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আদর মহব্বত কমে যায়। এই টুকিটাকি খুনসুটিগুলো জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পেজ সূচীপত্র

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি থাকবেই। একে অপরের সাথে খুনসুটি না করলে যেমন আনন্দ হয় না আবার এই খুনসুটি যদি একে অপরকে সবসময় কটাক্ষ করে কথা বলা, ছোট করে কথা বলা, অসম্মানজনক ও অশোভনীয় বাক্য ব্যবহার করা। এগুলো করতে থাকলে একে অপরের প্রতি মানসিক শ্রদ্ধা কমতে থাকে। তৈরি হয় সংসার জীবনে একে অপরের সাথে মানসিক দূরত্ব। যার পরিণামে হতে পারে অনেক কিছু।পুরুষ শান্তি খুঁজে নারীর কোলে হয়তো মা নয়তো প্রেমিকার অথবা তার অর্ধাঙ্গিনী কোলে এটাই একদম সত্য কথা কথাগুলো আমার নয় কথাগুলো বলেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

যে সকল কারণে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ভালোবাসা কমে যায়

সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি বিভিন্ন কারণে ঝগড়াঝাটি হতে পারে কিন্তু এটি যদি দীর্ঘ পর্যায়ের রূপ নেয় তাহলে সংসার জীবনে একে অপরের প্রতি অবহেলা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে স্ত্রীদের কিছু বদ অভ্যাসের কারণে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর আদর-ভালোবাসা ও মহাব্বত কমতে থাকে। যে অভ্যাসগুলো স্ত্রীদের পরিহার করা উচিত। অভ্যাসগুলো হলো - 

আরও পড়ুন ঃ ত্বক বা স্কিন কালো হয়ে যাওয়ার ১০ কারণ।

  • যে সকল স্ত্রীরা স্বামীর মুখে মুখে তর্ক করে,
  • স্বামীর পরিবারকে অপছন্দ করলে বা ছোট করে কথা বললে,
  • স্বামী কোন কিছু এনে দিলে তার অবমূল্যায়ন করলে,
  • স্বামীর মতামতের বাইরে জেদ করে কোন কিছু করলে,
  • স্বামী যেটা বুঝাতে চায় স্ত্রী তার উল্টাপাল্টা বুঝাতে চাইলে,
  • যেকোনো বিষয়ে স্বামীকে সন্দেহ করলে। ইত্যাদি।

সংসারে উন্নতি আসে না স্ত্রীর যে সকল অভ্যাসের কারণে 

সংসারে সুখ, শান্তি ও উন্নতিতে ভরে উঠুক এটা সকলেই চায়। কিন্তু কিছু কিছু কারণে বিশেষ করে স্ত্রীদের কিছু বদ অভ্যাসের জন্য সংসারে আয়-উন্নতি কমে যায়। যে সকল স্ত্রীর মধ্যে এই বদগুণগুলো রয়েছে তাদের এ বদগুনগুলো পরিহার করা উচিত। স্ত্রীদের বদ অভ্যাস গুলো হলো - 

  • স্ত্রী যদি প্রতিনিয়ত দেরি করে ঘুম থেকে উঠে,
  • স্ত্রী যদি স্বামীর সাথে খারাপ আচরণ করে,
  • স্ত্রী যদি স্বামীর পরিবারকে নিজের পরিবার মনে না করে,
  • স্ত্রী যদি স্বামীর কথা মতো না চলে। ইত্যাদি।

স্ত্রীর কাছে স্বামীর গুরুত্বপূর্ণ অধিকার 

একটি সংসারে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সুখ শান্তি বিরাজ করার জন্য স্ত্রীর গুরুত্বটা তাই প্রাধান্য পায় সেজন্য স্ত্রীকে সবসময় নরম ভদ্র ও মুক্তি ভাষার কথা বলার চেষ্টা করতে হয় একজন স্ত্রীর কাছে স্বামীর নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ণ অধিকারগুলো রয়েছে - 

আরও পড়ুন ঃ সুন্দরী স্ত্রী থাকতেও পুরুষরা কেন অন্য নারীর প্রেমে পড়েন?

  • স্বামীকে সালাম দেওয়া,
  • স্বামীর সাথে নরম সুরে কথা বলা,
  • স্বামীর ঘরটাকে শান্তিময় করে রাখা,
  • স্বামী পছন্দ করে না এমন কাজ না করা,
  • স্বামীর প্রতি সহনশীল মনোভাব প্রদর্শন করা। ইত্যাদি।

স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে না ঘুমালে যে ক্ষতিগুলো হয়

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি নিয়েই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে একে অপরের পাশাপাশি থাকবেন। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে এক বিছানায় ঘুমাবেন এটাই স্বাভাবিক। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে এক বিছানায় না ঘুমালে যে ক্ষতিগুলো হয় সেগুলো হলো -

আরও পড়ুন ঃ যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর প্রাকৃতিক ১৮ উপায়ে ও খাবার।

  • স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দিনে দিনে ঘনিষ্ঠতা কমে যায়,
  • একে অপরের প্রতি অনীহাভাব বা ঘৃণার সৃষ্টি হয়,
  • সম্পর্কের মাঝে টান ধরে,
  • ছোটখাটো ঘটনা বড় আকার ধারণ করে,
  • একে অপরের প্রতি দূরত্ব সৃষ্টি হয়,
  • সব সময় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তর্ক বিবাদ লেগেই থাকে,
  • অন্যের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে,
  • পরিশেষে বিচ্ছেদে রূপ নেয়। ইত্যাদি।

যে সকল নারীর সাথে সম্পর্ক থাকলে জীবনে কষ্ট বাড়ে 

স্বামী-স্ত্রী সংসার সব সময় সুখের হোক এটাই সবার প্রত্যাশা! কিন্তু কিছু কিছু নারীর কারণে সংসারে সুখ শান্তির পরিবর্তে নেমে আসে অশান্তি। দিনে দিনে নষ্ট হলে থাকে একটি সংসার। যে সকল নারীর সাথে সম্পর্ক থাকলে জীবন বরবাদ হয়ে যায়, সেই নারীগুলোর লক্ষণ হলো -

আরও পড়ুন ঃ বয়সে ছোট পুরুষের প্রতি নারীরা কেন আকৃষ্ট হন?

  • যে সকল নারীর লোভ বেশি,
  • যে নারী বিয়ের পরে স্বামীর বাড়ির লোকজনের চাইতে বাবার বাড়ির লোকজনকে বেশি প্রাধান্য দেয়,
  • যে সকল নারী কথায় কথায় খোটা দিয়ে কথা বলে,
  • যে সকল নারী কথায় কথায় স্বামীর পরিবারকে ছোট করে দেখে। ইত্যাদি।

একজন স্ত্রীর জন্য স্বামীর চেয়ে বড় আপন আর কেউ হয় না 

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটির কারণে স্বামীর প্রতি যদি স্ত্রীর মন খারাপ হয় তাহলে কারো কু-বুদ্ধি শুনে মহা মূল্যবান সম্পদ নিজের স্বামীকে কখনো মানসিক কষ্ট দিয়ে তাকে অন্যের সামনে ছোট করবেন না। মনে রাখবেন কোন স্বামী, স্ত্রীর হুকুমে নয় বরং তারা ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে স্ত্রীর আবদারগুলো পূর্ণ করে থাকে। একজন স্ত্রীকে সবসময় নিম্নের বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে -
  • মনে রাখবেন স্বামী ব্যতীত এই পৃথিবীতে কোথাও আপনার মূল্য বা গ্রহণযোগ্যতা নেই।
  • একজন স্ত্রী, স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেলে বাহ্যিক পরিপাটি মনে হলেও আত্মিক সুখ থাকে না।
  • স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে গেলে এই সমাজ আপনাকে ভালো থাকতে দিবে না।
  • স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে গেলে প্রত্যেক নারীকেই সমাজ কু-দৃষ্টিতে দেখে।
সংসারের ছোটখাটো বিষয়গুলো উভয়ে মানিয়ে চলুন মেনে নিন। এতে করে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সুখ শান্তি বিরাজ করবে সংসার সুখের হবে।

ভালো স্ত্রীর বৈশিষ্ট্য

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি না থাকলে স্বামী-স্ত্রী জীবনটা বোরিং ফিল মনে হয়। তবে এই খুনসুটি আনন্দপর্ণ করার জন্য স্ত্রীদের কিছু ভালো বৈশিষ্ট্য বা গুন থাকা উচিত। যে বৈশিষ্ট্যগুলো একজন স্ত্রীকে স্বামী অন্তরের অন্তস্থলে জায়গা করে নিতে পারেন। ভালো স্ত্রীর বৈশিষ্ট্যগুলো হলো - 

  • ভালো স্ত্রীরা স্বামীর সাথে নম্র ও ভদ্র ভাবে কথা বলে,
  • ভালো স্ত্রীরা অল্পতেই স্বামীর সাথে কান্না করে দেয়,
  • এরা খুব রাগী স্বভাবের হয়,
  • এরা অল্পতেই রেগে যায়, আবার খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় আসে,
  • ভালো মনের স্ত্রীরা মন খুলে স্বামীর সাথে কথা বলে,
  • ভালো মানের স্ত্রীরা স্বামীর পছন্দ-অপছন্দের সন্তুষ্ট থাকে,
  • কথায় কথায় স্বামীকে ছোট করে না,
  • কথায় কথায় স্বামীকে খোটা দিয়ে কথা বলে না। ইত্যাদি।

বাড়িতে উন্নতি না হওয়ার কিছু কারণ

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটির মধ্যে দিয়ে আনন্দ উল্লাসে সংসারে উন্নতি হতে হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সংসারে কিছু কিছু কাজের কারণে বাড়িতে উন্নতি কমে যায়। সংসারে উন্নতি হয় না এমন কাজগুলো সকলেরই পরিহার করা উচিত, কাজগুলো হলো -

  • বাড়ির মেইন গেটে বা দরজার সামনে জুতা স্যান্ডেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা,
  • বিছানায় বসে খাবার খাওয়া,
  • সন্ধ্যার সময় শুয়ে থাকা,
  • সন্ধ্যার সময় ঘর ঝাড়ু দেওয়া,
  • পায়ে ধুলোবালি মাখা অবস্থায় খাবার খাওয়া,
  • সাংসারিক কাজে ভাঙ্গা জিনিসপত্র ব্যবহার করা। ইত্যাদি।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক বৃন্দ সংসারে স্বামী-স্ত্রীর টুকিটাকি খুনসুটি সম্পর্কিত আজকের আর্টিকেলটিতে সংসারের সুখ শান্তি বিরাজ করার জন্য একজন স্ত্রীর ভূমিকা অগ্রগণ্য, স্বামীর ভূমিকাও কোন অংশে কম নয় এই বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি। স্বামীরা কাজ করে অফিসে-আদালতে, মাঠে-ঘাটে পথে-প্রান্তরে! বলা যায় টাকা ইনকামের দায়িত্ব স্বামীর কাঁধে আর সংসারের সুখ শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব স্ত্রীর মানসিকতায়।
সেজন্য সংসারে সুখ শান্তি বজায় রাখতে স্ত্রীদের মন-মানসিকতায় উদারতা থাকতে হয়। কথায় বলে সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে, গুণধর স্বামী যদি থাকে তার সনে। যে সকল স্ত্রীরা স্বামীর শাসন মেনে চলে না তারা স্বামীর ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না। পরিশেষে বলতে চাই স্বামীর অনুশাসন মেনে চলুন সংসারে সুখ শান্তি বজায় রাখুন। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url