ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি লেখা। ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাদ্য। এই ডিমকে একেক জন একেক রকম ভাবে খেয়ে থাকেন। আসলে আমরা অনেকেই জানিনা ডিম কিভাবে খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়।
আজকের আটিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন ডিম কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়? ভাজি না সিদ্ধ,, পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ? চলুন জেনে আসি ডিমের পুষ্টিমান অক্ষুন্ন রেখে খাওয়ার জন্য পুষ্টিবিজ্ঞানীরা কি বলছেন।
পেজ সুচিপত্র
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার, এ সম্পর্কে বিভিন্ন পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন মতামত প্রদান করেছেন। তবে এই আর্টিকেলটি পড়ে সিদ্ধ ডিম নাকি ভাজি ডিম বা পোচ ডিম, কোন ডিমের উপকার বেশি ইত্যাদি মতামতগুলোর ভিত্তিতে আপনারা ডিমের পুষ্টিগুণ বিশ্লেষণ করে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন ডিম কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। পাঠক বন্ধুরা চলুন নিম্নের আলোচনা পড়ে জেনে নেওয়া যাক কোন ধরনের ডিমের উপকারিতা বেশি সে সম্পর্কে।
ডিমের পুষ্টিগুণ ও পুষ্টিমান
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কিত আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা জেনে নিব ডিমের পুষ্টিমান ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। একটি ডিমে নিম্নোক্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।
- এনার্জি বা খাদ্য শক্তি - ৭৮ ক্যালোরি,
- প্রোটিন - ৬.২৯ গ্রাম,
- ফ্যাট বা চর্বি - ৫.৩ গ্রাম,
- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড,
- কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা - ০.৫৬ গ্রাম
- কোলেস্টেরল - ১৮৬ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি ১২,
- ভিটামিন ডি,
- রিবোফ্লেভিন,
- কোলিন,
- জিংক,
- আয়রণ,
- ক্যালসিয়াম,
- সেলেনিয়াম। ইত্যাদি।
- এছাড়াও ডিমে রয়েছে একাধিক খনিজ ও ভিটামিন।
তথ্য ঃ ইউএসএএফএ।
পোচ ডিমের পুষ্টিগুণ
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা জেনে নেব ডিম পোচ খেলে কি পরিমাণ ভিটামিন পাওয়া যায় সে সম্পর্কে।
পোচ ডিমে পুষ্টিগুলো অক্ষুন্ন থাকার পাশাপাশি ক্যালরির পরিমাণ থাকে প্রায় ৯০ ভাগ। সেই হিসেবে পোচ ডিম খেলেই বেশি উপকার পাওয়া যায়। পোচ ডিমে পুষ্টিমান আরো বাড়াতে সরিষার তেলে ভেজে নিতে পারেন। শিশুদের জন্য ডিম পোচে তেলের পরিবর্তে গরম পানি ব্যবহার করা ভালো।
পুষ্টিবিদদের মধ্যে পোচ ডিম খেলে বেশি উপকার তবে ভয়ের কারণ হলো পোচ ডিমে সালমোলিনা নামক ব্যাকটেরিয়া থাকে যা ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। কাজেই পোচ ডিমে পুষ্টি বেশি হলেও না খাওয়াই ভালো।
আরও পড়ুন ঃ ডিমের কুসুম নাকি সাদা অংশ কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারীি
অমলেট বা ভাজি ডিমের পুষ্টিগুণ
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা আলোচনা করব ডিম ভাজি বা ওমলেট করে খেলে কি পরিমাণ পুষ্টি পাওয়া যায় সে সম্পর্কে।
বিশেষজ্ঞদের মতে পেঁয়াজ, মরিচ, তেল ও অন্যান্য মসলা দিয়ে ভাজি বা ওমলেট করে ডিম খেতে সুস্বাদু হলেও পুষ্টির মান কিছুটা কমে যায়। সেজন্য ওমলেট বা ভাজির চেয়ে সিদ্ধ ও পোচ ডিমে পুষ্টিগুণ বেশি থাকে।
আধা-সিদ্ধ বা হাপ-বয়েল ডিমের পুষ্টিগুণ
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ আলোচনায় এখন আমরা জেনে নিব ডিম আধা-সিদ্ধ বা হাপ-বয়েল করে খেলে কি পরিমাণ উপকার পাওয়া যায় সে সম্পর্কে।
অনেকেই বেশি পুষ্টির লোভে আধা-সিদ্ধ বা হাপ-বয়েল করে করে ডিম খেতে পছন্দ করেন। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে আধা-সিদ্ধ ডিম স্বাস্থ্য ঝুঁকি কারণ হতে পারে।
আপনি হয়তো জানেন না এতে পুষ্টি ঠিক থাকলেও স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে যায় অর্থাৎ ডিম পুরোপুরি সিদ্ধ না হলে সেখানে স্যালমোলিনা নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে যায় যা পরবর্তীতে পেটের পীড়া তৈরি করে।
আরও পড়ুন ঃ হাঁসের ডিম নাকি মুরগির ডিম কোন ডিমের পুষ্টিগুণ বেশি
পুষ্টিমানে এগিয়ে সিদ্ধ ডিম
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা জেনে নিব ডিম সিদ্ধ করে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় সে সম্পর্কে।
ডিম সিদ্ধ করে রান্না করলে বা সিদ্ধ করে খেলে স্যালমোলিনা নামক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে না ফলে সিদ্ধ ডিম খেলে ক্ষতির ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়াও প্রাকৃতিক পুষ্টি ধরে রাখে সিদ্ধ ডিম। সিদ্ধ ডিম খেলে পুষ্টিমান ঠিক থাকে এবং উপকার বেশি পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন ঃ মেথির ২৫ টি উপকারিতা আছে পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা।
একটি করে ডিম প্রতিদিন উচিত
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কিত আলোচনা এখন আমরা জেনে নেব প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে পারে।
প্রতিদিন ডিম খেলে উপরে উল্লেখিত পরিমাণে পুষ্টি পাওয়া যায়, সাথে পাওয়া যায় বিভিন্ন রকম ভিটামিন, আন্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রয়োজনীয় মিনারেলস। সে জন্য প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে মোটামুটি ভাবে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয়।
বি ঃ দ্র ঃ যাদের ডায়াবেটিস, হাই প্রেসার বা কোলেস্টেরল বেশি তাদের সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন একটি করে ডিম খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন ঃ মাংসের চেয়ে বেশি প্রোটিন যে ১১ খাবারে।
ডিম কিভাবে খাওয়া উচিত
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি আধা-সিদ্ধ কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কিত আলোচনায় এখন আমরা জেনে নেব কিভাবে ডিম খেলে পুষ্টিমান বজায় থাকে ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি রিমুভ করে।
বিভিন্ন পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতামত বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, ডিম ভাজি বা ওমলেটে তেল-মসলার কারনে কিছুটা স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। অপর দিকে পোচ বা আধা-সিদ্ধ ডিমে ব্যাকটেরিয়া জীবিত থাকতে পারে যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়।
সেজন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে, পুষ্টিমান ঠিক রেখে, বেশি উপকার পাওয়ার জন্য ডিম পুরোপুরি সিদ্ধ করে কোন রকম তেল -মাসলা, লবণ বা বিটলবণ ছাড়া খাওয়া উচিত।
যাদের ডিম খাওয়া উচিত নয়
ডিম ভাজি না সিদ্ধ পোচ নাকি হাফ বয়েল কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আলোচনা ডিম কাদের খাওয়া উচিত নয় সে সম্পর্কে। ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু একটি খাদ্য। তবে যে সকল ব্যক্তিদের
- ডিম খেলে যাদের এলার্জি হয়, তাদের না খাওয়াই ভালো,
- পেটের সমস্যা হলে ডিম না খাওয়াই ভালো,
- ক্রনিক কিডনি ডিজিজের পেশেন্ট যারা তাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ডিম না খাওয়াই ভালো,
- আই বি এস এর পেসেন্টদের ডিম না খাওয়াই ভালো।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, ডিম খাওয়া সম্পর্কিত আজকের আর্টিকেলটি পড়ে ইতোমধ্যে আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন ডিম খাওয়ার স্বাস্থ্যকর উপায় সম্পর্কে। ডিম আপনি যে কোন ভাবেই খেতে পারেন তবে পুরোপুরি স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্যকর উপায়ে ডিম খাওয়া উচিত। নইলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
এরকম আরো আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন আর হ্যাঁ আর্টিকেলটি আপনার প্রিয়জনদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না প্লিজ।। প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ডিম খান স্বাস্থ্য ঠিক রাখুন। আজকের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url