অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কে জানুন

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কে জানানোর জন্যই আজকের আর্টিকেলটি লেখা। জন্ম নিবন্ধন হলো জন্মের পরে একজন নাগরিকের সরকারিভাবে নাগরিকত্বের প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। প্রত্যেক নাগরিকের তথ্যগুলো সরকারিভাবে সরকারি রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করাকে জন্ম নিবন্ধন বলা হয়। জন্ম নিবন্ধনের পরে নাগরিককে তার ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত যে সার্টিফিকেট বা সনদ দেয়া হয় তাকেই জন্ম নিবন্ধন সনদ বলা হয়।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কে জানুন

এই গুরুত্বপূর্ণ জন্ম নিবন্ধন সনদটি পাওয়ার জন্য অনলাইনে সঠিক তথ্যগুলো পূরণ করে আবেদন করতে হয়। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম, জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে? জন্ম নিবন্ধনের ফি কত? নতুন জন্ম নিবন্ধন করার সতর্কতা কি? এ ধরনের সকল বিষয় সম্পর্কে। চলুন আর দেরি না করে জন্ম নিবন্ধনের মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

পেজ সুচিপত্র

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে আমরা আপনাদেরকে জানাবো জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও জন্ম নিবন্ধন করার জন্য যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় সে সম্পর্কে। আপনারা দেশ কিংবা বিদেশ যে কোন জায়গা থেকেই ঘরে বসে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করে জন্ম সনদ বা সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে প্রথমেই আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে। জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপে ধাপে কমপ্লিট হয়। ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে নিম্নে আলোচনা করা হলো।

আরও পড়ুন ঃ জিমেইল একাউন্ট তৈরি করার নিয়ম জিমেইল একাউন্ট ডিলিট করার নিয়ম।

প্রথম ধাপ ঃ অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করে জন্ম সনদ পেতে চাইলে প্রথমেই যে কোন ব্রউজার থেকে সরকারি ওয়েবসাইট ( //bdris.gov.bd/br/application ) ভিজিট করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে ঢুকলেই আপনি নতুন জন্ম নিবন্ধন করার অপশন পেয়ে যাবেন। এরপরে জন্ম নিবন্ধন করার অপশনগুলো খুব সহজেই সম্পন্ন করতে পারবেন।

আরও পড়ুন ঃ বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১৫ টি উপায় জেনে নিন।

দ্বিতীয় ধাপ ঃউক্ত ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করার পরে আপনি কোন কার্যালয় থেকে জন্ম নিবন্ধন সমদ সংগ্রহ করতে চান সেই এলাকা নির্বাচন করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আপনি আপনার বর্তমান ঠিকানা বা স্থায়ী ঠিকানা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা নির্বাচন করতে পারবেন। আপনার জন্ম যদি দেশের বাহিরে হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দূতাবাস নির্বাচন করতে হবে। এই নির্বাচিত এলাকার কার্যালয় থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে হবে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম

তৃতীয় ধাপ ঃ এই ধাপে আপনাকে জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে একটি ফরম পূরণ করতে হবে।

  • ফর্মের প্রথমে আবেদনকারী নামের দুটি অংশ ইংরেজিতে ও বাংলায় দুইভাবেই স্পষ্ট করে লিখতে হবে। ইংরেজিতে লেখার সময় অবশ্যই ইংরেজি বড় হাতের অক্ষর বা ক্যাপিটাল লেটার লিখতে হবে। মনে রাখবেন নামের একাধিক অংশ আলাদা আলাদা ভাবে লিখতে হবে। নামের যদি একটি অংশ (যেমন - নাঈম) থাকে তাহলে প্রথম অংশ বাদ দিয়ে দ্বিতীয় অংশে নামটি লিখতে হবে।
  • স্টার্ট মার্ক (*) বা তারকা চিহ্নিত ঘরগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
  • নিবন্ধনকারীর জন্ম তারিখ উল্লেখ করতে হবে। 
  • জন্ম তারিখের পরের ঘর দুটিতে যথাক্রমে নিবন্ধনকারী পিতা-মাতার কততম সন্তান সেটি এবং নিবন্ধনকারীর লিঙ্গ (পুরুষ/মহিলা) উল্লেখ করতে হবে।
  • নিবন্ধনকারীর (শিশুর) জন্মস্থানের ঠিকানা লিখতে হবে। 

ফর্মে উল্লেখিত সকল ঘরগুলো যথাযথভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে ফর্মের নিচের ডান দিকে 'পরবর্তী' বাটনে ক্লিক করতে হবে।

চতুর্থ ধাপ ঃউপরের পরবর্তী বাটনে ক্লিক করার পরে আপনার সামনে চতুর্থ ধাপে একটি ফর্ম ওপেন হবে। এই ফর্মটি যথাযথ ও সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।

  • এই ফর্মের প্রথম ঘরে নিবন্ধনকারীর পিতার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদের নম্বর লিখতে হবে। এর পরের ঘর দুটিতে নিবন্ধনকারীর পিতার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর ও জাতীয়তা উল্লেখ করতে হবে।
  • একই ভাবে নিবন্ধনকারীর মাতার উক্ত তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে।

উক্ত তথ্যগুলো নির্ভুলভাবে পূরণ করার পরে ফর্মের নিচের ডান দিকে থাকা 'পরবর্তী' বাটনে ক্লিক করতে হবে।

পঞ্চম ধাপ ঃ এই ধাপে আপনাকে আপনার ঠিকানা লিখে দিতে হবে। প্রথমেই "আপনি কি নিম্নলিখিত কোন ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করতে চান?" এরকম একটি অপশন থেকে কোনটিই নয় সিলেক্ট করে দিলে ঠিকানা লেখার জন্য একটি পেজ আপনার সামনে ওপেন হবে। এই অপশনে আপনার জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা এক হলে চেক বক্সে  টিক (✓) দিন অথবা আলাদা করে ঠিকানা লিখতে হবে। একই নিয়মে বর্তমান ঠিকানার ঘর পূরণ করতে হবে।

আরও পড়ুন ঃ অনলাইনে বিকাশ এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার নিয়ম জেনে নিন।

ষষ্ঠ ধাপ ঃজন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়মগুলো যথাযথ ভাবে সম্পন্ন হলে পরের পেজে আবেদনকারীর তথ্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর সাথে নিবন্ধনকারীর সম্পর্ক, আবেদনকারীর মোবাইল নাম্বার, ইমেইল এড্রেস ও প্রয়োজনীয় তথ্য লিখতে হবে। নিবন্ধনকারীর বয়স যদি ১৮ বছরের বেশি হয় তাহলে তিনি নিজেই আবেদন করতে পারবেন।

সপ্তম ধাপ ঃউপরোক্ত ধাপগুলোর সকল তথ্য সঠিক ও নির্ভুলভাবে দিলে কোন সমস্যার সম্মুখীন হবেন না। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার নিয়মগুলো ভালো ভাবে মেনে চললে কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। তথ্যগুলো সঠিকভাবে লিখা হয়ে গেলে, লেখার ভুল-ত্রুটি সংশোধনের জন্য আপনাকে প্রুপ কপি দেখানো হবে। তথ্যগুলো ভালো করে দেখে নিন, ভুল থাকলে সংশোধন করে দিন।

আরও পড়ুন ঃ ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন জেনে নিন।

এখানে আপনাকে ইপিআই টিকা কার্ড এর সত্যায়িত কপি এবং জন্মস্থান বা স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের জন্য পিতা-মাতা / পিতামহ / পিতামহ এর দ্বারা স্বনামে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ঘোষিত আবাসস্থলের বিপরীতে হালনাগাদ করা বা ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ বা প্রমানপত্র সংযোজন করতে হবে। উপরোক্ত সব ধাপগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়ে গেলে এবার সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিন।

অষ্টম ধাপ ঃ জন্ম নিবন্ধনের আবেদনটি সঠিকভাবে সাবমিট করা হয়ে গেলে আপনাকে একটি আবেদন নম্বর দেয়া হবে। যে নম্বরটি দিয়ে সহজেই জন্ম নিবন্ধনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এই পৃষ্ঠার "আবেদন পত্র প্রিন্ট করুন" বাটনটিতে ক্লিক করে আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করে নিন। আবেদনপত্র প্রিন্ট করার মাধ্যমে আপনার অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেল।

নবম ধাপ ঃঅনলাইনে আবেদন করার ১৫ দিন পরে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ও আবেদনপত্রটির প্রিন্ট কপি স্থানীয় নির্দিষ্ট কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জমা দেওয়ার পরে জন্ম নিবন্ধন সনদ বা সার্টিফিকেট আপনি হাতে পেয়ে যাবেন।

জন্ম নিবন্ধন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কিত আর্টিকেলটির এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার সময় কি কি ডকুমেন্ট লাগে সে সম্পর্কে। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে জন্ম নিবন্ধন আবেদন অনলাইনে করতে হয়। অনলাইনে আবেদন করার সময় নিম্নস্ত তথ্যগুলো প্রয়োজন হয় 

  • টিকা কার্ড বা ইপিআই কার্ড,
  • হাসপাতালের ছাড়পত্র,
  • বাসা-বাড়ির কর বা ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ,
  • পিতা-মাতার সচল মোবাইল নাম্বার। ইত্যাদি।

উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো ছাড়াও যার জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা হবে তার বয়সের উপর ভিত্তি করেও কিছু ডকুমেন্ট কমবশি প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়ুন ঃ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসার জন্য বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগের নিয়ম জেনে নিন।

বাচ্চার বয়স ০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে হলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে আমরা এখন আপনাদেরকে জানিয়ে দিব শিশুর বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন হলে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে সে সম্পর্কে। শিশুর বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন হলে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য প্রয়োজন হয় - 

  • টিকা কার্ড বা ইপিআই কার্ড,
  • হাসপাতালের ছাড়পত্র,
  • বাসা-বাড়ির কর বা ট্যাক্স পরিষদের রশিদ,
  • পিতা-মাতার সচল মোবাইল নাম্বার,
  • বাবা-মায়ের ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি,
  • বাবা-মায়ের জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি। ইত্যাদি।

এছাড়াও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগতে পারে।

বাচ্চার বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছরের মধ্যে হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে এখন আপনাদেরকে জানাবো বাচ্চার বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলে জন্ম নিবন্ধন করার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে সে সম্পর্কে। এই বয়সের বাচ্চার জন্য যে ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় -

  • টিকা কার্ড বা ইপিআই কার্ড,
  • হাসপাতালের ছাড়পত্র,
  • বাসা-বাড়ির কর বা ট্যাক্স পরিষদের রশিদ,
  • পিতা-মাতার সচল মোবাইল নাম্বার,
  • বাবা-মায়ের ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি,
  • বাবা-মায়ের জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি,
  • প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র। ইত্যাদি।
গুরুত্ব কাগজপত্র গুলো ছাড়াও প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র লাগতে পারে।

বাচ্চার বয়স ৫ বছরের বেশি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কিত আর্টিকেলটির  এপর্যায়ে জানতে পারবেন বাচ্চার বয়স ৫ বছরের বেশি হলে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য যে সকল ডকুমেন্ট লাগে সে সম্পর্কে। ডকুমেন্টগুলো হল -

  • প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট শিক্ষা পরীক্ষার সনদ,
  • পিতা-মাতার স্থানীয় ঠিকানার কর বা ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ,
  • পিতা-মাতার সচল মোবাইল নাম্বার,
  • বাবা-মায়ের ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি,
  • বাবা-মায়ের জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি,
  • বয়স প্রমাণের জন্য ডাক্তারের প্রত্যয়ন পত্র। ইত্যাদি।

উপযুক্ত ডকুমেন্টগুলো ছাড়াও প্রয়োজনীয় কোন ডকুমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফি কত

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কিত আর্টিকেলটির এ পর্যায়ে আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো অনলাইনে জন্ম নিবেদন আবেদন করতে কত ফি বা খরচ লাগে সে সম্পর্কে। জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে বিভিন্ন ভাগে ভাগে এই প্রদান করতে হয়।

অনলাইনে আবেদন করার জন্য ০ থেকে ৪৫ দিন বয়স পর্যন্ত কোনো ফি প্রদান করতে হয় না অর্থাৎ বিনামূল্যে জন্ম নিবন্ধন করা যায়। ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত মাত্র ২৫ টাকা ফি প্রদান করতে হয়। এই বয়সের জন্য বাহিরের দেশ থেকে অনলাইনে আবেদন করতে চাইলে মাত্র ১ মার্কিন ডলার খরচ বা ফি প্রদান করতে হয়।

জন্ম নিবন্ধন এর ভুল-ত্রুটি সংশোধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করার সময় ১০০ টাকা ফি প্রদান করতে হয়। বাহিরের দেশ থেকে অনলাইনে সংশোধনের ফি বাবদ ২ মার্কিন ডলার ফি প্রদান করতে হয়।

জন্ম সনদ বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতে পাওয়ার জন্য কোন ফি প্রদান করতে হয় না। জন্ম সনদ হারিয়ে গেলে বা কোন কারনে নকল তোলার প্রয়োজন হলে সে ক্ষেত্রে ৫০ টাকা ফি প্রদান করতে হয়। বাহিরের দেশ থেকে অনলাইনে জন্ম সনদের নকল পেতে ১ মার্কিন ডলার ফি প্রদান করতে হয়।

জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট শিরোনামে আর্টিকেলটিতে আপনারা আবেদন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যগুলো জানতে পেরেছেন। এ পর্যায়ে আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করার নিয়ম সম্পর্কে। জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করার জন্য নিম্নোক্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার পর সেটি সংগ্রহ করার জন্য আপনি যে নিবন্ধকেনের কার্যালয় নির্বাচিত করেছিলেন সেই কার্যালয় অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদ অথবা পৌরসভা থেকে সনদ সংগ্রহ করতে হবে।

আপনি যদি সিটি কর্পোরেশন থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে চান সেই ক্ষেত্রে আবেদন করার ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে সনদ সংগ্রহ করতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা না হলে, আবেদনটি অটোমেটিক্যালি বাতিল হয়ে যাবে। সেই ক্ষেত্রে পুনরায় জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান এবং পৌরসভার কাউন্সিলর ও মেয়র কর্তৃক সিল -স্বাক্ষর করিয়ে নিতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়মসহ সকল তথ্যগুলো জানতে পেরেছেন। এখন আপনাদেরকে জানাবো জন্ম নিবন্ধন করার সময় কোন ভুল-ত্রুটি থাকলে সেটি পরিবর্তন বা বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার সময় খুব সূক্ষ্মভাবে পূরণ করতে হবে যেন কোন ভুল-ত্রুটি না হয়। এরপরও যদি কোন ভুল-ত্রুটি হয়ে যায় সেই ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন আবেদন বাতিল করতে চাইলে নিম্নোক্ত উপায়ে বাতিল করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন বাতিল করতে চাইলে যেখানে আপনি জন্ম নিবন্ধন আবেদন করেছেন অর্থাৎ আপনার ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা কাউন্সিলরের অফিসে যেতে হবে। আবেদনটি বাতিল করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আবেদনের অ্যাপ্লিকেশন আইডি (Application ID) জানতে হবে। জন্ম নিবন্ধন আবেদনটি কেন বাতিল করতে চান তার সঠিক কারণ দেখিয়ে আবেদন বাতিল করার জন্য পূণরায়  জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে হবে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার পর অনুমোদন করা না হলে, সেটি পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অটোমেটিক্যালি বাতিল হয়ে যাবে। উক্ত আবেদনে কোনরকম ভুল-ত্রুটি থাকলে সেটি পরিবর্তন অথবা বাতিল করতে চাইলে নিবন্ধক কার্যালয় বাতিলের আবেদন করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি যুক্ত আবেদনটি বাতিল করে পুনরায় নতুন করে আবেদন করতে পারবেন। অফিসে গিয়ে আবেদন বাতিল করতে না পারলে সে ক্ষেত্রে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপরে আবার নতুন আবেদন করতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কিত পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব জন্ম নিবন্ধন আবেদন সম্পর্কে কিছু সাধারণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা গুগলে সার্চ করে থাকেন এরকম কিছু সাধারণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হলো।

প্রশ্ন ঃ জন্ম নিবন্ধন কি সবার জন্য বাধ্যতামূলক?

উত্তর ঃজ্বি, জন্ম নিবন্ধন সকল নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ অনুসারে প্রত্যেক বাংলাদেশী নাগরিকের জন্য জন্ম নিবন্ধন (অনলাইন) বাধ্যতামূলক।

প্রশ্ন ঃ শিশুর বয়স কত বছর পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধন ফি ফ্রি?

উত্তর ঃশিশুর বয়স ০ (জিরো) থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধন ফি ফ্রি। এই বয়সের শিশুদের জন্ম নিবন্ধন করতে কোন খরচ লাগে না।

প্রশ্ন ঃ জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?

উত্তর ঃজন্ম নিবন্ধন করার জন্য বয়স ভেদে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তারতম্য রয়েছে যা উক্ত আর্টিকেলের মধ্যে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা আছে। একটু কষ্ট করে পড়ে নিন।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, জন্ম নিবন্ধন সনদ বা সার্টিফিকেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সনদ যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত জীবনের প্রথম সনদ। শিশু জন্মের পরপরই জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করে জন্ম সনদ সংগ্রহ করে রাখা উচিত। জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার সময় অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে সঠিক তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করতে হবে যেন জন্ম সনদে কোন ভুল-ত্রুটি না থাকে। তথ্য আপলোডে ভুল-ত্রুটি হলে জন্ম সনদে ভুল-ত্রুটি হতে পারে। তথ্য পূরণ ও সনদ সংগ্রহের সময় ভালো করে দেখে নিন যেন কোন ভুল ত্রুটি না থাকে।

আশা করি, অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কিত আজকের আর্টিকেলটি পড়ে জন্ম নিবন্ধন আবেদন সংক্রান্ত সকল তথ্যাবলি সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। এই তথ্যগুলো অন্যদেরকে জানার জন্য আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিন যেন তারাও উপকৃত হন। এরকম আরো আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন। এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে কমেন্টস বক্সে জানানোর অনুরোধ রইল। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।


তথ্যগুলো সংগৃহীত

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url