ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন জেনে নিন
ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন এটি জানানোর জন্যই আজকের আর্টিকেলটি লেখা। বর্তমান ডিজিটাল যুগে সবার কাছে আর্থিক লেনদেনের জনপ্রিয় মাধ্যমে হয়ে উঠছে মোবাইল ব্যাংকিং তথা বিকাশ, নগদ উপায় ইত্যাদি। উক্ত মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোর মধ্যে বিকাশ বেশ জনপ্রিয়। আমি আলোচনা করব বিকাশ একাউন্ট খোলার বিভিন্ন নিয়ম সম্পর্কে।
আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন তথ্য প্রযুক্তির এযুগে টাকা লেনদেনের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম বিকাশের একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয়? বিকাশের একাউন্ট খুলতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়? বিকাশের ব্যালেন্স চেক করার নিয়ম, বিকাশের পিন কোড কত? বিকাশের ডায়ালিং কোড কত? ইত্যাদি বিষয়গুলো। চলুন জেনে নেয় যাক বিকাশে নতুন একাউন্ট খোলার নিয়মগুলো।
পেজ সুচিপত্র
বিকাশের নতুন একাউন্ট কি নিয়মে খুলবেন
ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন অনেকেই এটা জানেন না। কিন্তু সবারই জানা বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্যে বিকাশই সেরা ও জনপ্রিয় লেনদেনের মাধ্যম সেজন্য প্রায় সকলেরই ইচ্ছা বিকাশে একটা একাউন্ট খোলার জন্য। বিভিন্ন উপায়ে বিকাশের নতুন একাউন্ট খোলা যায়। যেমন -
- স্মার্টফোনে বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে,
- স্মার্টফোন অথবা বাটন ফোনে কোড ডায়ালিং করে,
- এজেন্টের মাধ্যমে।
বিকাশের নতুন একাউন্ট খোলার উক্ত উপায়গুলো নিম্নে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো।
বিকাশের নতুন একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে
ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন বা খোলার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে এগুলো জানার জন্য আপনারা অনেকে গুগলে সার্চ করে থাকেন। একটু কষ্ট করে ধৈর্যসহ নিচের দিকে পড়ে এ বিষয়গুলো জেনে নিন। স্মার্টফোনে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হয়।
- একটি স্মার্টফোন,
- বাংলাদেশ অপারেটরের একটি সচল সিম কার্ড,
- গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি ও ফটোকপি,
- এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি,
- গ্রাহক নিজে উপস্থিত থাকতে হয়। ইত্যাদি।
উক্ত ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে বিকাশের নতুন একাউন্ট খুলতে হবে।
আরও পড়ুন ঃ বাটন ফোনে উপায় একাউন্ট খোলার নিয়ম।
বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন
বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন এটা জানার জন্য আপনারা আর্টিকেলটি নিচের দিকে পড়তে থাকুন। বিকাশের নতুন একাউন্ট খোলার জন্য স্মার্ট ফোনে বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে যেভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা যায় সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো। বিকাশের একাউন্ট খোলার জন্য এই প্রক্রিয়াগুলো বিভিন্ন ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়। এই ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
প্রথম ধাপ ঃ বিকাশ অ্যাপস এর মাধ্যমে নতুন একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমেই স্মার্টফোনের গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে বিকাশ অ্যাপস ইন্সটল করে নিতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপ ঃবিকাশ অ্যাপস ইন্সটল করা হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি ও ফোন নাম্বার দিয়ে অ্যাপসটি রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। বিকাশ অ্যাপসটি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য যে ফোন নাম্বারটি দিবেন সেই ফোন নাম্বারটি অবশ্যই আপনার নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত হতে হবে।
আরও পড়ুন ঃ নগদ একাউন্ট খোলার ও বন্ধ করার নিয়ম।
তৃতীয় ধাপ ঃ উপরের ধাপ সফলতার সহিত কমপ্লিট হলে ওকে বাটনে ক্লিক করার পরে যেই নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলবেন যেই নাম্বারটি লেখার অপশন আসবে এবং ঐ নাম্বারটি লিখতে হবে। উক্ত নাম্বারের অপারেটর (টেলিটক, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল ইত্যাদি) সিলেক্ট করতে হবে। সিলেক্ট করে ওকে করলে আপনার নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে। বিকাশ অ্যাপসের স্ক্রিনে থাকা অবস্থায় সেই ভেরিফিকেশন কোডটি লিখে ওকে করলে ভেরিফিকেশন হয়ে পরবর্তী ধাপে যাবে।
চতুর্থ ধাপ ঃ উপরের তিনটি ধাপ সফলতার সহিত সম্পন্ন হয়ে গেলে চতুর্থ ধাপে যার নামে একাউন্ট খোলা হবে তার ছবি, এনআইডি কার্ডের ছবি ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ভেরিফিকেশনসহ বিভিন্ন তথ্যাদি প্রদান করতে হবে।
আরও পড়ুন ঃ উপায় অ্যাকাউন্ট খোলার সহজ নিয়ম ২০২৫জেনে নিন।
পঞ্চম ধাপ ঃ এনআইডি কার্ডের ফ্রন্ট পেজ এবং পিছনে পেজ, দুই পাশের ছবি তুলে আপলোড করতে হবে। আপলোড করে ওকে করলে পরবর্তী ধাপের কার্যক্রম শুরু হবে।
ষষ্ঠ ধাপ ঃ ছবি আপলোড করার পরে বিকাশ অ্যাপ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনআইডি কার্ডের সকল তথ্য দেখানো হবে এবং সেখানে আপনার ব্যক্তিগত পরিচয় বহন করে এমন সব তথ্য (যার নামে বিকাশ আইডি খোলা হবে তার লিঙ্গ অর্থাৎ পুরুষ না মহিলা, আয়ের উৎস, আনুমানিক মাসিক আয় এর পরিমাণ ও পেশা ইত্যাদি) প্রদান করতে হবে। এ সকল তথ্যগুলো আপলোড করে ওকে করলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে।
আরও পড়ুন ঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম।
সপ্তম ধাপ ঃ উপরের ধাপগুলো সম্পূর্ণ হয়ে গেলে এই ধাপে যার নামে বিকাশের একাউন্ট খোলা হবে তার ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ডের ছবির ভেরিফিকেশন করা হবে এই ক্ষেত্রে গ্রাহকের ছবি তোলার জন্য স্ক্রিনেই দিকনির্দেশনা দেয়া থাকবে। দিক নির্দেশনাগুলো হল
- ছবি তোলার পরিবেশে পর্যাপ্ত আলো থাকতে হবে,
- স্কিনে ক্যামেরার ফ্রেমের ভিতরে আপনার ফেস থাকতে হবে,
- স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যানিংয়ের জন্য কিছুক্ষণ সময় অপেক্ষা করতে হবে।
- ছবিটা যেন স্পষ্ট হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ইত্যাদি।
- ছবি তোলার পরে ছবি আপলোড দিয়ে ওকে করলেই আপনার একাউন্ট খোলার কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
অষ্টম ধাপ ঃউপরোক্ত সকল ধাপ ও কাজগুলো সফলতার সহিত কমপ্লিট হয়ে গেলে ওকে করার পরে ভেরিফিকেশন করতে কিছু সময় নিবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভেরিফিকেশন হয়ে আপনার মোবাইলে কনফার্মেশন এসএমএস পাঠানো হবে। তারপরে নতুন বিকাশ একাউন্টে পিন সেট করলে, একাউন্ট লগইন করে ব্যবহার করতে পারবেন।
বিকাশের পিন কোড সেট করার নিয়ম
বিকাশের একাউন্ট খোলা হয়ে গেলে পরবর্তী কাজ হল বিকাশের পিন কোড ও ইউজার নেম সেট করা। বিকাশের একাউন্ট ব্যবহার ও নিরাপত্তার জন্য ইউনিক ও শক্তিশালী ৫ (পাঁচ) সংখ্যার পিন কোড সেট করতে হবে। এই সব কিছু ওকে হয়ে গেলে পিন সেট করার জন্য আপনাকে সাইন ইন করে সর্বপ্রথমে যে নাম্বার দিয়ে বিকাশের একাউন্ট খুলেছেন সেই নাম্বার লিখে ওকে করলে আপনার মোবাইলে ৬ সংখ্যার একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে।
আরও পড়ুন ঃ মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক।
এই কোডটি লিখে পুনরায় ওকে করলে পিন সেট করার পেজটি ওপেন হবে। এখানে নতুন পিন অপশনে ৫ (পাঁচ) সংখ্যা পিন কোড লিখতে হবে। বিকাশ পিন কোড কনফার্ম করার জন্য পুনরায় কোডটি লেখার অপশন আসবে এবং কোডটি লিখে ওকে করলে নতুন পিন সেট হয়ে যাবে। উকত কাজগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে বিকাশ একাউন্টের ইউজার নেম সেট করার অপশন আসবে। এই অপশনে আপনার নামের প্রথম অংশ ও শেষের অংশ লিখলে ওকে করলে ইউজার নেম সেট হয়ে যাবে।
বিকাশের ডায়ালিং কোড কত
ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন এটি আমরা উক্ত আলোচনা থেকে জেনেছি। এখন আপনাদেরকে জানাবো বিকাশে ডার্লিং কোড কত সে সম্পর্কে। আপনারা অনেকেই বিকাশর ডায়ালিং কোড জানার জন্য গুগলে সার্চ করে থাকেন। এখানেই জেনে নিন বিকাশের ডায়ালিং কোড। বিকাশের ডায়ালিং কোড হলো *247#
বিকাশের পিন ভুলে গেল করণীয় কি
ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন সেটা আমরা আগেই জেনেছি। এখন আমরা জেনে নিব বিকাশের পিন কোড ভুলে গেলে কি করতে হবে সে সম্পর্কে। বিকাশর পিন কোড ভুলে গেলে টেনশনের কোন কারণ নেই। যেকোনো সময় নতুন করে পিন কোড সেটআপ করা যায়। কিছু নিয়মকানন্দ মেনে বিকাশের নতুন পিন কোড তৈরি করে নিতে হবে।
বিকাশের পিন পরিবর্তন করার নিয়ম
ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট খোলার পরে যে কোন প্রয়োজনে বিকাশের পিন পরিবর্তন করার দরকার হতে পারে। পুরাতন পিন কোড পরিবর্তন করে একটি শক্তিশালী, গঠনমূলক ও গ্রহণযোগ্য পিন কোড কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে পরিবর্তন করতে হবে।
বিকাশের ব্যালেন্স চেক করার নিয়ম
ঘরে বসে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন সেটি উপরের আলোচনায় জেনেছেন। একাউন্ট খোলার পরে ব্যালেন্স কিভাবে চেক করবেন বা বিকাশ একাউন্টে কত টাকা আছে কিভাবে জানবেন সেটি এখন জেনে নিন। বিকাশের ব্যালেন্স দুইভাবে চেক করা যায়।
- একটি হলো অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে,
- অন্যটি হলো যেকোনো ফোনে বিকাশের কোড *247# ডায়াল করে।
স্মার্টফোনে বিকাশের ব্যালেন্স সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে বিকাশ অ্যাপস ওপেন করে ব্যালেন্স দেখা যায়। অপরদিকে বাটন ফোন বা স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই কোড *247# ডায়ালিং করে পিন নম্বর বসিয়ে টাকা দেখা বা ব্যালেন্স চেক করাসহ অন্যান্য সকল আর্থিক লেনদেন করা যায়।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বিকাশের একাউন্ট খোলার নিয়ম ও ব্যালেন্স দেখাসহ সকল তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে জেখেছি এখন আমরা জেনে নিব বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য কি করতে হবে সে সম্পর্কে। একাউন্ট বন্ধ করার জন্য নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে কাগজপত্র নিয়ে বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে বা এজেন্ট এর কাছে গিয়ে বন্ধ করে নিতে হবে। এজন্য নিম্নের বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হবে।
- বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স জিরো করতে হবে,
- যে সকল কাগজপত্র দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা ছিল ঐ সকল কাগজপত্র নিতে হবে,
- যার নামে একাউন্ট তাকে সঙ্গে নিতে হবে,
- এগুলো নিয়ে বিকাশের কাস্টমার কেয়ার বা এজেন্ট এর কাছে গিয়ে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে নিতে হবে।
বি ঃ দ্র ঃ বিকাশ একাউন্ট ঘরে বসে খোলা গেলেও ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করা যায় না।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বিকাশের নতুন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন এ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যাবলী আপনারা বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এ ধরনের আরও আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন আর আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিন অন্যান্য বন্ধুরাও তথ্যগুলো জানতে পারে। আর্টিকেল পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Informative