স্বপ্নদোষ কাকে বলে স্বপ্নদোষ কেন হয় স্বপ্নদোষের কারণ ও প্রতিকারের উপায়
স্বপ্নদোষ কাকে বলে স্বপ্নদোষ কেন হয় স্বপ্নদোষের কারণ ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি লেখা। পুরুষদের মধ্যে অতীব সাধারণ একটি ঘটনা হলো স্বপ্নদোষ বা নাইটফল। বয়ঃসন্ধিক্ষণ থেকে শুরু করে মাঝ বয়স পর্যন্ত প্রায় সকল পুরুষেরই এই অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়ে থাকে। ব্যক্তি বিশেষে স্বপ্নদোষে বীর্যপাতের পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে।
স্বপ্নদোষ কাকে বলে বা স্বপ্নদোষ কি
স্বপ্নদোষ কাকে বলে স্বপ্নদোষ কেন হয় স্বপ্নদোষের কারণ ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে আলোচনার শুরুতেই আমরা জেনে নিব স্বপ্নদোষ কি বা স্বপ্নদোষ কাকে বলে সে সম্পর্কে। মানব সন্তান, বিশেষ করে ছেলেরা বয়ঃন্ধিকালে পৌঁছালে তাদের বীর্য ও শুক্রাণু তৈরি হতে থাকে। এই তৈরিকৃত বীর্য ও শুক্রাণু ক্রমাগত বীর্যথলিতে জমা হয়। বীর্য জমা হয়ে থলি পূর্ণ হয়ে গেলে বা বীর্যথলির ধারণ ক্ষমতার বেশি হলে, কোন সক্রিয় কর্মকাণ্ড ব্যতিরেখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিদ্রারত অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপথ দিয়ে বীর্য দেহের বাহিরে চলে আসে। এভাবে বীর্য ও বীর্যথলির ভারসাম্য নিয়ন্ত্রিত হয়। এই প্রক্রিয়াটাকেই সংক্ষেপে স্বপ্নদোষ বলা হয়।
আরও পড়ুন ঃ হাঁসের ডিম নাকি মুরগির ডিম কোন ডিমে পুষ্টিগুণ বেশি।
পুরুষ বা ছেলেদের ক্ষেত্রে বীর্যপাত ঘটে এবং নারী বা মেয়েদের ক্ষেত্রে বীর্যপাত ঘটতে পারে বা সিক্ততা হতে পারে অথবা উভয় হতে পারে। এটি বয়ঃন্ধিকালে বা তারুণ্যে বেশি ঘটে থাকলেও কোন কোন ক্ষেত্রে বয়ঃন্ধিকাল পার হবার পরেও হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনিপথ সিক্ত থাকা সকল ক্ষেত্রেই স্বপ্নদোষের নিশ্চয়তা প্রদান করে না।
স্বপ্নদোষ কথাটি বাংলা ভাষায় প্রচলিত হলেও এটি স্বপ্নদোষ নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। স্বপ্নদোষ কথাটি অঞ্চল ভেদে বা বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন -
- নৈশকালীন নির্গমন,
- ঘুমন্ত রাগমোচন,
- নিদ্রারত রাগমোচন,
- নিদ্রারতি,
- যৌন স্বপ্ন,
- সিক্ত স্বপ্ন,
- নৈশপতন,
- নাইটফল,
- বাংলা ভাষায় বলে 'স্বপ্নদোষ'।
স্বপ্নদোষ কেন হয়
স্বপ্নদোষ কাকে বলে স্বপ্নদোষ কেন হয় স্বপ্নদোষের কারণ ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা জেনে নিব স্বপ্নদোষ কেন হয় সে সম্পর্কে। স্বপ্নদোষ একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া। এটি শারীরিক কোন সমস্যা নয়। বয়ঃন্ধিকালে যৌনাঙ্গ বর্ধনের ফলস্বরূপ এটি ঘটে থাকে।
বয়ঃন্ধিকালে হরমনাল পরিবর্তনের জন্য নতুনভাবে যারা এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তারা প্রথমেই এটিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেন না বা আতংক ও হীনমন্যতায় ভুগে থাকেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বপ্নদোষের পরিমাণও কমতে থাকে এবং এটাকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলে মনে হয়।
আরও পড়ুন ঃ ত্বক বা স্কিন কালো হয়ে যাওয়ার ১০ কারণ।
স্বপ্নদোষের কারণ
আরও পড়ুন ঃ গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া নিরাপদ কি না এবং উপকারিতা ও অপকারিতা।
- যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করে এমন চিন্তা বা আলাপ-আলোচনা করা।
- যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করে এমন ভিডিও দেখা।
- পর্নোগ্রাফি বা নীল ছবি দেখা।
- যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করে এমন বই পড়া।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণেও স্বপ্নদোষ হতে পারে।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের কারণেও স্বপ্নদোষ হতে পারে।
- উত্তেজক বা যৌন সম্পর্কিত স্বপ্নও স্বপ্নদোষে কারণ হতে পারে।
উপরোক্ত কারণগুলো স্বপ্নদোষ বা নাইটফল হওয়ার জন্য মুখ্য কোনো বিষয় নয় এই কারণগুলো গৌণ। কাজেই স্বপ্নদোষ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোন কারণ নেই।
স্বপ্নদোষ প্রতিকারের উপায়
আরও পড়ুন ঃ ঠান্ডায় মাথা ব্যথা হলে করণীয় ১৬ টি টিপস।
- ঘুমানোর আগে যৌন উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে এমন বিষয়ে আলাপ আলোচনা না করা।
- লাউ বা কদুর তরকারি খাওয়া এই তরকারি শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।
- দিনের বেলায় নিষ্ক্রিয় না থেকে কাজ-কর্মে বা পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকা, এতে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে, রাত্রে ভালো ঘুম হয়।
- মানসিক চাপ, উদ্বিগ্নতা বা বিষন্নতার কারণেও স্বপ্নদোষ বেড়ে যেতে পারে। সেজন্য নিজেকে শান্ত রাখুন উত্তেজনা কর কাজ পরিহার করুন।
- হালকা গরম চায়ে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খেলে তুলসী পাতার ঔষধিগুণের কারণে অনেক সময় স্বপ্নদোষ কমে যেতে পারে।
- বিভিন্ন ভেষজ ঔষধ এ রোগের সমাধানে বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে অশ্বগন্ধা, ত্রিফলা বা শিলাজিতের চূর্ণ খেলে স্বপ্নদোষ প্রতিকারে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
- শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। এতেও স্বপ্নদোষ প্রতিরোধে উপকার পাওয়া যায়।
- শরীর ঠান্ডা থাকলে স্বপ্নদোষ কম হয় এই মর্মে রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে গোসল করে নেওয়া যেতে পারে।
- রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধ বা ডিম না খাওয়া।
- মনের মধ্যে খারাপ চিন্তা ভাবনার কারণেও অনেক সময় স্বপ্নদোষ হতে পারে। সেজন্য এই চিন্তা ভাবনা থেকে দূরে থাকার জন্য নিজেকে ধর্মীয় বই-পুস্তক পড়ার মাধ্যমে ব্যস্ত থাকতে হবে।
স্বপ্নদোষের চিকিৎসা
স্বপ্নদোষ কাকে বলে স্বপ্নদোষ কেন হয় স্বপ্নদোষের কারণ ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কিত আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা জেনে নিব স্বপ্নদোষের চিকিৎসা সম্পর্কে।
বয়ঃন্ধিকালে যৌন হরমোন সহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরিবর্তন ঘটে। এ সময় অনেকের স্বপ্নদোষ হয় আবার কারো কারো স্বপ্ন দোষ নাও হতে পারে।
তার মানে এই নয় যে, যার স্বপ্নদোষ হলো না সে অসুস্থ বা যৌন সমস্যা আছে। আবার স্বপ্নদোষের সাথে স্বপ্ন দেখার কোন সম্পর্ক নেই।
স্বপ্নদোষ বা নাইটফল শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তাই এর কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক স্বপ্নদোষের জন্য ভুক্তভুগীকে ডাক্তারের দেওয়া বিভিন্ন রকমের পরামর্শ মেনে চলতে হয়।
আরও পড়ুন ঃ গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার নিরাপদ কি না।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, স্বপ্নদোষ বা নাইটফল সম্পর্কিত আজকের আর্টিকেলটি পড়ে স্বপ্নদোষের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে কোন মতামত থাকলে কমেন্টস বক্সে জানানোর অনুরোধ রইল। আর আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিবেন প্লিজ।
আশা করি, আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে। এরকম আরো আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকুন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় স্বপ্নদোষ কোন রোগ নয়, কাজে এটি নিয়ে বেশি চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই। সব সময় মনের মধ্যে ভালো চিন্তা রাখবেন, ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url