সুন্দরবন ভ্রমণঃ ঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন থেকে

সুন্দরবন ভ্রমণ ঃ ঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন থেকে। সুন্দরবন ভ্রমণ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানানোর জন্যই আজকের আর্টিকেলটি লেখা। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ নামে পরিচিত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। বাঘ হরিণসহ সব বৈচিত্র্যময় প্রাণীর দেখা মিলে এই সুন্দরবনে, সাথে থাকছে সুন্দরী, শাল-সেগুনসহ বিভিন্ন রকমের গাছ গাছালি। যেগুলো সৌন্দর্য্য পিপাষু প্রতেক পর্যটকদের মনকে আকৃষ্ট করে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন

আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন সৌন্দর্যের অন্যতম আকর্ষণ সুন্দরবন, সুন্দরবন কিভাবে যাবেন? সুন্দরবন ভ্রমনে যাওয়ার খরচ কত হয়? সুন্দরবন ট্যুরে গিয়ে কোথায় থাকবেন? কোথায় খাবেন? ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে। এছাড়াও আরো জানতে পারবেন সুন্দরবন গিয়ে সুন্দরবনের আশেপাশে আরও বিভিন্ন বিখ্যাত ও দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে।

ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন

ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা বন। সুন্দরবন বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়কর বনভূমিগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ ও ভারতের ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠা এই অপরূপ বনভূমি সুন্দরবন যা পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত। সুন্দরবনের সিংগাভাগ অঞ্চল বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার কিছু অংশ জুড়ে বিস্তৃত। 

লোনা পরিবেশে সমুদ্র উপকূলবর্তী সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রো ফরেস্ট বা বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখন্ড বনভূমি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠা সুন্দরবন নামের এই বিশাল  বনভূমির বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬৫১৭ বর্গ কিলোমিটার যা প্রায় ৬৬ শতাংশ এবং বাকি ৩৪ শতাংশ হলো ভারতের মধ্যে।

সুন্দরবন ভ্রমণে গেলে আপনারা দেখতে পাবেন সুন্দরী ও গেওয়াসহ বিভিন্ন রকমের ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালি।এছাড়াও এ বনে দেখতে পাবেন ২৯০ প্রজাতির পাখি, ১২০ প্রজাতির মাছ, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণিসহ ৪৫৩ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল এই সুন্দরবন।

সুন্দরবন কিভাবে যাবেন

সুন্দরবনের নাম শুনলে সবারই সুন্দরবন ভ্রমণে যেতে ইচ্ছে করে, কিন্তু সুন্দরবন কিভাবে যেতে হবে এটা অনেকেরই অজানা। এই তথ্যগুলো জানার জন্য অনেকেই google এ সার্চ করে থাকেন আর্টিকেলের এই অংশটুকু পড়লে আপনি সুন্দরবন কিভাবে যাবেন সে তথ্যগুলো জানতে পারবেন বাংলাদেশ কথা বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে সুন্দর বনে যাওয়ার যে সুন্দর সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে। আপনি চাইলে ঢাকা থেকে বিমান পথে, নৌপথে জাহাজ যোগে, সড়ক পথে বাস যোগে এবং রেল পথে ট্রেন যোগে সুন্দরবন যেতে পারবেন যারা সুন্দরবনের আশেপাশের এলাকাগুলোতে থাকেন তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নৌপথে জাহাজযোগে সুন্দরবন যেয়ে থাকেন। এছাড়াও রাজশাহী থেকে সরাসরি বাসযোগে ও ট্রেন যোগে সুন্দরবন যেতে পারবেন।

আরও পড়ুন ঃ দুবাই ভ্রমণ ঃ ঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক শহর দুবাই থেকে।

সুন্দরবন ভ্রমণের উপযুক্ত সময় কখন

সুন্দরবন ভ্রমণ ঃঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন থেকে। আপনারা সকলেই সুন্দরবন কথাটা শুনলেই ঘুরতে যাওয়ার জন্য আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। সুন্দরবন সত্যিই খুবই সুন্দর ও সৌন্দর্যমন্ডিত একটি বন যা সকলকেই আকৃষ্ট করে। এই সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময় আছে যে সময়গুলোতে সব কিছু পরিবেশ পরিস্থিতি মানুষের অনুকূলে থাকে। সুন্দরবন ভ্রমণের সবচেয়ে আরামদায়ক মৌসুম বা সময় হলো সেপ্টেম্বর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই সময়কাল।

আরও পড়ুন ঃ নেপাল ভ্রমণ ঃ ঘুরে আসুন হিমালয় কন্যা নেপাল থেকে।

সুন্দরবনের বিখ্যাত ও দর্শনীয় ভ্রমন স্থান 

ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন বাংলাদেশের সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর ও দর্শনীয় ট্যুরিং স্পট। সুবিশাল এই ম্যানগ্রো বনটি বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীর আবাসিক স্থল। এই সুন্দরবন ভ্রমণের পাশাপাশি বিখ্যাত ও দর্শনীয় যে সকল স্থানগুলো দেখাবেন, সেগুলো নিম্নরূপ - 

  • দুবলার চর,
  • কটকা,
  • কটকা বীচ,
  • কচিখালী বীচ,
  • করম জল,
  • হাড়বাড়িয়া,
  • মান্দর বাড়িয়া,
  • হীরণ পয়েন্ট,
  • জামতলা সৈকত। ইত্যাদি।

দুবলার চর ঃ বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে দুবলার চর। সুন্দরবন এলাকার মধ্যে ছোট্ট একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় বালুময় চরাঞ্চল হলো দুবলার চর। ছোট্ট এই চর বিভিন্ন কারণেই টুরিস্টদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। যখন সাগর শান্ত থাকে অর্থাৎ অক্টোবর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই সময়কালে বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য জেলেরা এই চরে অস্থায়ীভাবে মাছ ধরার জন্য বসবাস করে। ছোট্ট এই দ্বীপের মধ্যে মৎস্য ধরার, মৎস্য প্রকিয়াজাত করন  ও শুটকি শুকানোর কাজ চলে। এছাড়াও দুবলার চরের আরও একটি আকর্ষণ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূণ্যস্নান ও রাসমেলা।

কটকা

কটকা ঃসুন্দরবনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত ও বন্যপ্রার্থীদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত একটি জনপ্রিয় স্থান হলো কটকা। এই স্থানটি থেকে নৌকায় করে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ও গাছগুলো খুব কাছে থেকে দেখা যায়। এছাড়াও এখনে দেখা মেলে ডোরাকাটা হরিণের দল, বাঘ এবং বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ও বণ্য পাখি।

আরও পড়ুন ঃ কক্সবাজার ভ্রমণ ঃ ঘুরে আসুন কক্সবাজার জেলার বিখ্যাত ও দর্শনীয় স্থান থেকে।

কটকা বীচ ঃ সুন্দরবনের কটকা পয়েন্ট থেকে কিছু দূর পায়ে হেঁটে সামনে এগুলোই দেখতে পাবেন কটকা সমুদ্র সৈকত অর্থাৎ এখান থেকে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ উপভোগ করতে পারবেন। আকর্ষণীয়, সুন্দর ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এই কটকা বীচ জুড়ে আঁকা থাকে লাল কাঁকড়ার বিভিন্ন শিল্পকর্ম, যেগুলো পর্যটকদের মনকে আকৃষ্ট করে।

কচিখালী বীচ ঃসুন্দরবন ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণীয় ও সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান হলো কচিখালী বীচ। অন্ধকারে সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয় এই কচিকালী সমুদ্র সৈকত। এই বীচে যাওয়ার সময় সকল পর্যটককে কটকা নদী পার হয়ে প্রায় ২-৩ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যেতে হয়। পায়ে হেঁটে এই পথ পাড়ি দেওয়ার সময় আপনাদের নজরে পড়বে বাঘ হরিণ সহ অন্যান্য প্রাণীদের পায়ের ছাপ, যা আপনার মনকে আকৃষ্ট করবে। সমুদ্র সৈকতের এই কচিখানি বীচের পাশেই রয়েছে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য।

আরও পড়ুন ঃ নগদে বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম ২০২৫।

করম জল ঃ করম জল সুন্দরবনের মধ্যে একটি অংশ যেখানে হরিণ ও কুমিরের প্রজনন কেন্দ্র রয়েছে। এই করম জলের মধ্যে কাঠের তৈরি পুল টেইলর আছে যেখান দিয়ে হাঁটা চলাফেরা করার সময় হরিণ, কুমির ও বানর সহ বিভিন্ন প্রজাতির বৈচিত্রো প্রাণী ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ গাছালি দেখতে পাবেন। মংলা পোর্ট  থেকে বেশ কাছে এই করম জল অঞ্চল।

আরও পড়ুন ঃ আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম ২০২৫।

হারবাড়িয়া ঃ সুন্দরবন ভ্রমণে গেলে আরো একটি দর্শনীয় ও বিখ্যাত পর্যটন স্পট পাবেন যার নাম হলো হারবাড়িয়া। এই স্থানটি মংলা পোর্ট থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেই মূলত: হারবাড়িয়া এলাকা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও এই এলাকায় ভ্রমণের সময় দেখতে পাবেন বিভিন্ন প্রজাতির বন্য পাখি, বন্যপ্রাণী ও বিশাল বনরাজি। যেগুলো আপনার মনকে আকৃষ্ট করবে।

হারবাড়িয়া

মান্দারবাড়িয়া সৈকত ঃমান্দার বাড়িয়া সমুদ্র সৈকতটি সুন্দরবনের অদূরে আরও একটি সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র যা দেখার জন্য প্রতিদিন অগণিত পর্যটক ভিড় করে থাকেন। মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত খুব সুন্দর ভাবে দেখা যায়।

হীরণ পয়েন্ট ঃ সুন্দরবনের মধ্যে সুন্দর একটি ট্যুরিং স্পট হলো হিরণ পয়েন্ট। হীরন পয়েন্ট স্পোর্টটি নীলকমল নামেও পরিচিত। এখানে কাঠের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আপনার সাথে দেখা মিলবে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, হরিণ, বানর, বন্যশুকর, কুমির, গুইসাপসহ অনেক প্রজাতির বন্যপ্রাণী। এখানে মাঝে মাঝে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পাওয়া যায়।

জামতলা সৈকত ঃ জামতলা সৈকত সুন্দরবনের পাশে একটি দর্শনীয় পর্যটন স্পট, যেখানে রয়েছে পর্যটকদের জন্য উঁচু ওয়াচ টাওয়ার। এই টাওয়ারে উঠে সুন্দরবনের সৌন্দর্যের খানিকটা উপভোগ করা যায়। এখান থেকে অনেক সময় হরিণ ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ অন্যান্য প্রাণীর দেখা মিলে। জামতলা ঘাট থেকে দু-তিন কিলো সামনে এগুলেই জামতলা সি বীচ দেখতে পাবেন। এই সি বীচটি টুরিস্টদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্পট।

সুন্দরবন ভ্রমণের ট্যুর প্যাকেজে কি কি অন্তর্ভুক্ত থাকে 

ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ভ্রমণে আপনারা পার্সোনালি যেতে পারেন, আবার কোন ট্যুর এজেন্সির মাধ্যমে ট্যুর প্যাকেজে যেতে পারেন। ট্যুর এজেন্সির মাধ্যমে সুন্দরবন ভ্রমনে গেলে টাকা একটু বেশি খরচ হলেও স্বাচ্ছন্দে সবগুলো দর্শনীয় ও বিখ্যাত স্থানগুলো দেখতে পারবেন। ট্যুর প্যাকেজে গেলে তিন দিন দুই রাত থাকার ব্যবস্থা, খাওয়া-দাওয়া, পরিবহন ব্যবস্থা, ট্যুর গাইড (ব্যক্তি), বিভিন্ন দর্শনীয় ও বিখ্যাত স্থানগুলো পরিদর্শন, নৌকা ভ্রমন, আদিবাসী গ্রাম পরিদর্শন, পাখির বিচরণ কেন্দ্র, ওয়াইল্ড লাইফ স্পট সহ বিভিন্ন বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে।

সুন্দরবন ভ্রমণের ট্যুর প্যাকেজ কয়দিনের

সুন্দরবন ভ্রমণের ট্যুর প্যাকেজ বিভিন্ন রকমের রয়েছে। থাকা, খাওয়ার, আবসন ব্যবস্থা, গাড়ি ভাড়া সকল ফি সহ ৩ দিন ২ রাত থেকে শুরু করে ৫ দিন ৪ রাত পর্যন্ত বিভিন্ন টুরিং এজেন্সিগুলো ট্যুর প্যাকেজ রেডি করে থাকে।

সুন্দরবন ভ্রমণে খরচ কত হয়

সুন্দরবন ভ্রমণ ঃঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন থেকে। যেকোনো ভ্রমনে খরচের কোন লিমিট নেই! এই খরচ নির্ভর করে আপনি কোথায় থাকবেন, কি খাবেন, কেমন পরিবেশে থাকবেন, লাক্সারি (এসি) ব্যাবস্থা, গাড়ি ভাড়া ইত্যাদির উপরে। বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে গেলে থাকা, খাওয়া এবং সুন্দরবনে ঘোরা-ফেরার জন্য বিভিন্ন জায়গার টিকিট ফ্রি সহ একটা প্যাকেজ তৈরি করে। তিন দিন দুই রাত থাকলে সবকিছুসহ সর্বনিম্ন খরচ হয় ৭৫০০ টাকা। পাঁচ দিন চার রাত এসি ব্যবস্থা থাকলে সর্বোচ্চ খরচ হয় ২৫ হাজার টাকা। পার্সোনালি দলবদ্ধভাবে গ্রুপ করে গেলে এই খরচ কম পড়ে।

সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়ে যেখানে থাকবেন

সুন্দরবন ভ্রমণ ঃঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন থেকে। সুন্দরবন ভ্রমণে গেলে সেখানে থাকার জন্য বিভিন্ন রকমের ও বিভিন্ন মানের আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। আপনারা এজেন্সির মাধ্যমে যান গেলে তারাই ব্যবস্থা করে দিবে। আর যদি পার্সোনালি সুন্দরবন ভ্রমণ করতে যান তাহলে জাহাজের মধ্যেও থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।

এছাড়াও সুন্দরবন অঞ্চলের টাইগার পয়েন্ট, হিরণ পয়েন্ট, কটকায় বন বিভাগের রেস্ট হাউসে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।মংলায় পর্যটন কর্পোরেশন এর হোটেল আছে, পশুর বন্দরে পর্যটকদের জন্য কিছু সাধারণ মনের হোটেল আছে। খুলনা নগরীতে আবাসিক হোটেলগুলোর মধ্যে হোটেল সালাম ক্যাসেল, হোটেল টাইগার গার্ডেন, হোটেল সিটি ইন, হোটেল মিনিয়াম ইত্যাদি রয়েছে।

সুন্দরবন ভ্রমণে যে সকল প্রয়োজনীয় উপকরণ সাথে নিবেন

ভ্রমণ মানেই আনন্দ, ভ্রমণ মানেই বিনোদন। তাই ভ্রমণে গিয়ে যেন অসুস্থ হয়ে না পাড়েন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।  ভ্রমনে বের হওয়ার সময় অবশ্যই সাথে ফার্স্ট এইড কিছু ব্যবস্থা রাখতে হবে। সুন্দরবনে লম্বা ট্যুরে যাওয়ার সময় যে সকল উপকরণগুলো সাথে রাখা উচিত সেগুলো হলো - 

  • স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করার জন্য ঢিলাঢালা লুজ ফিটিংয়ের কাপড়-চোপড়,
  • মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য মসকিউটো ক্রিম, 
  • বনের আশেপাশে অন্ধকারে চলার জন্য টস লাইট,
  • সুন্দরবনের ভিতরে প্রাণী বৈচিত্র দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য ভালো দূরবীন।
  • খাবার স্যালাইন,
  • প্যারাসিটামল ট্যাবলেট,
  • মেট্রো ট্যাবলেট,
  • ব্যথা-নাশক মলম, ব্যান্ডেজ।
  • হাঁটাহাঁটি বা দৌড়াদৌড়ি করার জন্য আরামদায়ক কেডস,
  • প্রচন্ড রোদে চলাচল করার জন্য আরামদায়ক টুপি, সানগ্লাস ও সানস্ক্রিন ক্রিম। ইত্যাদি।

সুন্দরবন ভ্রমণে পর্যটকদের নিরাপত্তা কেমন

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা এর সৌন্দর্য  অবলোকন করার জন্য এসে থাকেন। যেখানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের আন্তর্জাতিক মানের পর্যটকদের আনাগোনা, সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবশ্যই ভালো হবে এটাই স্বাভাবিক। সুন্দরবন কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সব সময় পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। এছাড়াও পর্যটকদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় এবং নিরাপদে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারেন নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গুলো করে থাকেন। 

  • পর্যটকরা যেন সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখতে পারেন সেই জন্য সশস্ত্র বন্ধকী বাহিনী থাকে।
  • সকল প্রকারের হুমকি ও সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য দশরথীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। 
  • সুন্দরবনের সব সময় সশস্ত্র বাহিনী টহল দেয়।
  • টুরিস্টরা যেন খুব সহজেই বিভিন্ন বিখ্যাত ও দর্শনীয স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারে এবং সেগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য লাইসেন্স প্রাপ্ত টুরিস্ট গাইডের ব্যবস্থা করে।
  • লঞ্চে করে বিভিন্ন স্থান দেখতে যাওয়ার সময় লাইক সাপোর্ট জ্যাকেটের ব্যবস্থা করে।
  • জরুরি প্রয়োজনে বিভিন্ন ওষুধ সরবরাহ করে।
  • সুন্দরবনের মধ্যে ঠিকমতো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না সেজন্য পরিবারের সাথে যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা করে থাকে সুন্দরবন কর্তৃপক্ষ।
  • এক কথায় সুন্দরবন কর্তৃপক্ষ সুন্দরবন ভ্রমণে টুরিস্টদের জন্য সকল প্রকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে থাকেন।

উপসংহার

আশা করি, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ট্যুর সম্পর্কিত আজকের আর্টিকেলটি পড়ে সুন্দরবন সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যগুলো বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। প্রিয় পাঠক বৃন্দ, যে কোন ভ্রমণ মানেই আনন্দ, ভ্রমণ মানেই মনের আত্মতৃপ্তি। ভ্রমণে গিয়ে সব সময় সচেতন থাকুন সুন্দরবন ভ্রমণের নিরাপদ দূরত্ব রেখে ভ্রমণ করুন। মাইনড ফ্রেশ করে ভ্রমণ করুন সুস্থ থাকুন। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aksgreenit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url